বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে পুরোপুরি সমর্থন দিয়ে আমরা আশা করেছিলাম দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা করবেন তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা নিজেরাই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে যাতে নির্বাচন ব্যাহত হতে পারে। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র্যালির পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সন্ধ্যা ৪টার দিকে নয়াপল্টন থেকে শুরু হয় এই র্যালি, যা কাকরাইল, মালিবাগ, বাংলামোটর হয়ে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশের জন্য কার্যালয়ের সামনে একটি অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে, যারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়েছি, তারা আজ নিজেই নির্বাচন ব্যাহত করার জন্য নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি বলেন, এই রাজনৈতিক জোটগুলো গণভোটের জন্য চাপ চাপ দিচ্ছে, যা স্পষ্টতই নির্বাচন নস্ট করার ষড়যন্ত্র। তিনি আরও বলেন, গণভোট হলে নির্বাচনের দিনই তা হতে হবে, কোনও পূর্বঘোষণার প্রয়োজন নেই। কারণ, দুটি ভোটের জন্য বহু অর্থের প্রয়োজন হবে, যা অপ্রয়োজনীয়।
অন্য এক বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধভাবে ইতোমধ্যে ঐক্য গড়ে তুলেছে, তবে কিছু অসৎ দলের ষড়যন্ত্রের কারণে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। তিনি বলেন, বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে দাবি করছে যে, ভোটের আগেই গণভট হতে হবে। তিনি স্পষ্ট করেন, গণভোট নির্বাচন এরই মধ্যে হওয়া উচিত, এটা পরিকল্পিতভাবে নয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে একগুচ্ছ গণতান্ত্রিক সংস্কারমূলক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এই সংস্কার কার্যপ্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকার সহযোগিতা করলে বিএনপি তাদের পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। তারা প্রায় এক বছর ধরে সংস্কারমূলক কাজ চালিয়ে গেছে, বিভিন্ন দলের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ১৭ অক্টোবর একসময়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন।
অন্যদিকে, কিছু সিদ্ধান্তের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, একদল উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য প্রেস কনফারেন্স করে জানিয়ে দেন যে, তাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে— রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সাত দিন সময় নির্ধারণ করা হবে। এতে চরম বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, কারণ এত দীর্ঘ সময়ের মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যে বৈঠকে অংশ নেওয়া দলের প্রতিনিধিরা কাজ করেছিলেন। তিনি জোড়ালোভাবে বলেন, সব টাকা-খরচের পরও কোনো ফলাফল আসেনি, যা মূলত রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি করছে।
সর্বশেষ, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় র্যালির পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
Leave a Reply